সংসদীয় নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর চিন-প্রীতিতেই রায় মলদ্বীপের

মালে, 22 এপ্রিল: দেশের সংসদীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয় পেল মালদ্বীপের চিনপন্থী রাষ্ট্রপতি মহম্মদ মুইজ্জুর দল ৷ রবিবার দেশের পার্লামেন্ট নির্বাচনের ফলা ঘোষণা হয়েছে ৷ আর সেই ফলাফলে দেখা গিয়েছে, 93-সদস্যের হাউসের জন্য অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেস (পিএনসি) 86টি আসনের মধ্যে 66টি আসনে জয় পেয়েছে ৷ মালদ্বীপের নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, বাকি সাতটি আসনের ফলাফল ঘোষণা করা বাকি রয়েছে ৷ যদিও মুইজ্জুর দল পিএনসি সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় 47টি আসনের থেকেও 19টি বেশি আসন পেয়েছে ৷
মুইজ্জুর পার্টির এই ব্যাপক জয়ের স্পষ্ট অর্থ, ভারতের দিকে না-গিয়ে চিনের দিকে রাজনৈতিক ঝোঁক থাকা সত্ত্বেও তাঁর দলকেই দেশবাসী সমর্থন করেছে। প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু, গত সেপ্টেম্বরে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আবদুল্লাহ ইয়ামিনের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন ৷ এরপরই প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয় মলদ্বীপের ৷ দেশের ‘ইন্ডিয়া ফার্স্ট’ নীতি বাতিল করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন মইজ্জু।
গত সপ্তাহে চিনপন্থী আরও এক নেতা আবদুল্লাহ ইয়ামিনের দুর্নীতির দায়ে 11 বছরের সাজা বাতিল হয়েছে। রাষ্ট্রপতি মুইজ্জু মালেতে ভোট দেওয়ার পর বলেন, “সকল নাগরিকের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভোটাধিকার প্রয়োগ করা উচিত ৷” তবে রবিবারের ভোটে রাষ্ট্রপতি পদে মুইজ্জুর কোনও প্রভাব পড়েনি। অন্যদিকে, প্রধান বিরোধী দল, মালদ্বীপ ডেমোক্রেটিক পার্টি (এমডিপি)-র ব্যাপক হার হয়েছে ভোটে ৷
মুইজ্জু চিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণেই পরিচিত। মার্চ মাসে, মালদ্বীপ এবং চিন ‘মালদ্বীপ প্রজাতন্ত্রে চিনের সামরিক সহায়তার বিধানের বিষয়ে’ একটি চুক্তিও করে ৷ যা ইঙ্গিত দেয়, প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুর সরকারের অধীনে মালে প্রতিবেশী ভারত-প্রীতি থেকে ক্রমশ দূরে সরছে। এই পদক্ষেপটি মলদ্বীপের ভূ-রাজনৈতিক ইস্যুতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ৷ যা চিনকে ভারত মহাসাগর অঞ্চলে তাদের সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর আরও একটি সুযোগ করে দিয়েছে। চুক্তিটিতে কার্যত স্পষ্ট যে, মুইজ্জু সরকার তাদের পূর্বসূরিদের চেয়েও চিনের দিকে ঝুঁকতে আরও বেশি মরিয়া এবং দৃঢ়।
অন্যদিকে, মলদ্বীপের সংসদীয় নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে ভারতও অবশ্যই চিন্তায় ৷ দেশের বিদেশনীতির জন্য, বিশেষ করে ভারত ও চিনের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করা হচ্ছে। মইজ্জুর জয় চিনের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠতা বাড়বে যা ভারত মহাসাগর অঞ্চলে কৌশলগত ভারসাম্যকে প্রভাবিত করতে পারে ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *